ইচ্ছাকৃত ঋণ খেলাপী শনাক্তকরণ এবং গৃহীতব্য ব্যবস্থা বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা


বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ তাদের ১২ ,মার্চ ২০২৪ এর সার্কুলার  নং: ০৬ এর মাধ্যমে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ও চ‚ড়ান্তকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে গৃহীতব্য ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা’ এর বিষয়ে নি¤œরূপ সংজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে: ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা অর্থ এমন কোনো খেলাপী ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কো¤পানী যিনি বা যা- (১) নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর অনুকূলে কোনো ব্যাংক-কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে গৃহীত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা বা এর অংশ বা এর উপর আরোপিত সুদ বা মুনাফা তার সামর্থ্য থাকা সত্তে¡ও পরিশোধ করে না; বা (২) কোনো ব্যাংক-কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে জালিয়াতি, প্রতারণা বা মিথ্যা তথ্য প্রদানের মাধ্যমে নিজের, তার পরিবারের সদস্যের, স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানীর নামে ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করে; বা (৩) কোনো ব্যাংক-কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে যে উদ্দেশ্যে ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা অন্য কোন আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছিলেন সে উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে উক্ত ঋণ, অগ্রিম, বিনিয়োগ বা আর্থিক সুবিধা বা এর অংশ ব্যবহার করেছে; বা (৪) ঋণ বা অগ্রিম এর বিপরীতে প্রদত্ত জামানত ঋণ বা অগ্রিম প্রদানকারী কোন ব্যাংক-কোম্পানী বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লিখিত পূর্বানুমতি ব্যতীত হস্তান্তর বা স্থানান্তর করেছে। খেলাপী ঋণ দেশের অর্থ‣নতিক প্রবৃদ্ধি ও ব্যাংকিং খাতের ঋণ ব্যবস্থাপনার অন্যতম প্রধান অন্তরায়। ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা চিহ্নিতকরণ এবং তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গৃহীত হলে শ্রেণিকৃত ঋণ হ্রাসসহ ব্যাংকিং খাতের ঋণ শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং ব্যাংকিং খাতের দক্ষতা, সক্ষমতা বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। ব্যাংকিং খাতের দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে ব্যাংক কোম্পানীর মূলধন, আয়, মুনাফা, তারল্য ও স্বচ্ছলতার উপর এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা সামগ্রিক অর্থ‣নতিক কর্মকান্ডকে আরও গতিশীল করবে। ফলে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতাকে নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণকরত চিহ্নিতকরণ এবং উক্ত ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ বিভিন্ন নিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ আবশ্যক। উল্লিখিত প্রেক্ষাপটে, ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ, চ‚ড়ান্তকরণ ও তাদের বিরুদ্ধে গৃহীতব্য ব্যবস্থা বিষয়ে নিম্ন বর্ণিত নির্দেশনাসমূহ অনুসরণীয় হবে: ৪। ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ: কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী খেলাপী হওয়ার পর উক্ত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কো¤পানী ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা কি না তা শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে: (১) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণসহ এ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পাদনের নিমিত্ত ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অব্যবহিত দুই ধাপ নিচের কর্মকর্তার অধীনে প্রধান কার্যালয়ে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ নামে একটি পৃথক ইউনিট আগামী ০৯ এপ্রিল ২০২৪ তারিখের মধ্যে গঠন করতে হবে; (২) ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এ প্রদত্ত ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার উপরিউক্ত সংজ্ঞা মোতাবেক তফসিলি ব্যাংক কর্তৃক তাদের কোনো খেলাপী ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কো¤পানী ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা কি না তা শনাক্ত করতে হবে
(৩) কোনো ঋণ গ্রহীতা খেলাপী হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার তৎপরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে উক্ত ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপী কি না তা নিরূপণের লক্ষ্যে বিবেচ্য বিষয়সমূহ বিবেচনায় নিয়ে ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট ইউনিট কর্তৃক পর্যালোচনাপূর্বক শনাক্ত করতে হবে। তবে যৌক্তিক কারণে বর্ণিত সময়ের মধ্যে শনাক্ত করা সম্ভব না হলে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদনক্রমে উক্ত সময় আরও ৩০ (ত্রিশ) দিন বৃদ্ধি করা যাবে। ৫। ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা চ‚ড়ান্তকরণ: কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কো¤পানী ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে শনাক্ত হলে তা চ‚ড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে নি¤েœাক্ত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে: (১) কোনো খেলাপী ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে শনাক্তকৃত হলে শনাক্তকরণের কারণ উল্লেখপূর্বক সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতাকে তার বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য ১৪(চে․দ্দ) কর্মদিবস সময় প্রদান করতে হবে; (২) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা বক্তব্য প্রদানে ব্যর্থ হলে অথবা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ গ্রহীতা কর্তৃক প্রদত্ত বক্তব্য গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হলে বা না হলে ‘ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্তকরণ ইউনিট’ কর্তৃক এ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক/প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। তবে জাতীয় শিল্প নীতিতে বর্ণিত সংজ্ঞানুযায়ী ‘বৃহৎ শিল্প’ খাতের ৭৫ (পঁচাত্তর) কোটি ও তদূর্ধ্ব, ‘মাঝারি শিল্প’ খাতের ৩০ (ত্রিশ) কোটি ও তদূর্ধ্ব এবং অন্যান্য খাতের ১০ (দশ) কোটি ও তদূর্ধ্ব স্থিতিস¤পন্ন ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের নির্বাহী কমিটির/পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন গ্রহণ আবশ্যক হবে। বাংলাদেশে কার্যরত বিদেশী ব্যাংক কর্তৃক এরূপ চ‚ড়ান্তকরণের ক্ষেত্রে স্থানীয় সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষের/ব্যবস্থাপনা কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে; (৩) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে চ‚ড়ান্তকরণের পর সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতাকে ৭(সাত) কর্মদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে অবহিত করতে হবে; (৪) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে চ‚ড়ান্তকরণের বিষয়টি গ্রাহক কর্তৃক অবহিত হওয়ার পর এতদ্বিষয়ে সংক্ষুব্ধ হলে সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান উক্ত বিষয়ে অবহিত হওয়ার পরবর্তী ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগের নিকট সংযোজনী-‘ক’ মোতাবেক আপীল করতে পারবে মর্মে ব্যাংকের পত্রে উল্লেখ থাকতে হবে। সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপীল না করলে এ বিষয়ে ব্যাংকের পূর্বের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। তবে সংক্ষুব্ধ ঋণ গ্রহীতা কর্তৃক আপীল করা হলে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্ত চ‚ড়ান্ত হিসাবে গণ্য হবে; (৫) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল কর্তৃক কোনো খেলাপী ঋণ গ্রহীতাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে শনাক্ত করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক উপরের অনুচ্ছেদ নং- ৫(১), ৫(২) ও ৫(৩) এ বর্ণিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে তা চ‚ড়ান্ত করতে হবে। তবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক পরীক্ষান্তে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে শনাক্তকৃত না হলে তা চ‚ড়ান্ত করার পূর্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট পরিদর্শন বিভাগের নিকট শনাক্তকৃত না হওয়ার কারণ উল্লেখ করে পত্র দিতে হবে এবং এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক পরিদর্শন বিভাগের মতামতের ভিত্তিতে তা চ‚ড়ান্ত করতে হবে। ৬। ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে গৃহীতব্য ব্যবস্থা: (১) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার বিদেশ ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা, ট্রেড লাইসেন্স ইস্যুতে নিষেধাজ্ঞা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানীজ অ্যান্ড ফার্মস (জঔঝঈ) এর নিকট কোম্পানী নিবন্ধনে নিষেধাজ্ঞা আরোপের নিমিত্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিকট ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার তালিকা প্রেরণ করত বর্ণিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ২৭খ(৬) ধারার আওতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুরোধ করা হবে। এক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ এ আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে; (২) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা কোনো রাষ্ট্রীয় পুর¯‥ার বা সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য হবেন না; (৩) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক গাড়ি, জমি, বাড়ি, ফ্ল্যাট ইত্যাদির নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের বিদ্যমান আইন/বিধির আওতায় যথাযথ কার্যব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে; (৪) কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক কোনো ঋণ গ্রহীতাকে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হলে সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা কর্তৃক ঋণ পরিশোধপূর্বক উক্ত তালিকা হতে অব্যাহতি প্রাপ্তির পর বিআরপিডি সার্কুলার নং-০২, তারিখ: ১১ ফেব্রæয়ারি ২০২৪ এর অনুচ্ছেদ নং-৪(১৩) এর নির্দেশনা মোতাবেক ৫ (পাঁচ) বছর অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবে না
(৫) কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসাবে তালিকাভুক্ত হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এর ২৭খ(৮) এ বর্ণিত বিধান পরিপালন সাপেক্ষে তার পরিচালক পদ শূন্য ঘোষণা করা হবে; (৬) কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান চ‚ড়ান্তভাবে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে তালিকাভুক্ত হলে এবং উক্ত তালিকাভুক্তির বিরুদ্ধে আপীল করা না হলে অথবা বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আপীল মঞ্জুর করা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক উক্ত ঋণ গ্রহীতাকে ২(দুই) মাস সময় প্রদান করে তার নিকট প্রাপ্য স¤পূর্ণ অর্থ ফেরত প্রদানের জন্য নোটিশ জারি করবে; (৭) নোটিশ প্রাপ্তির ২(দুই) মাসের মধ্যে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা তার নিকট প্রাপ্য অর্থ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃক তার পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন সাপেক্ষে উক্ত ঋণ গ্রহীতার বিরুদ্ধে ফে․জদারী মামলা দায়ের করবে। এরূপ ফে․জদারী মামলা দায়ের করা সত্তে¡ও সংশ্লিষ্ট ঋণ, অগ্রিম বা পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হবে না; (৮) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রতি ক্সত্রমাসিকে ব্যাংকের অডিট কমিটির সভায় উপস্থাপন করতে হবে। অডিট কমিটি উক্ত উপস্থাপিত প্রতিবেদন ও সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী পর্যালোচনান্তে গুরুত্ব বিবেচনায় এতদ্বিষয়ে তাদের মতামত/সিদ্ধান্ত পরবর্তী পর্ষদ সভাকে অবহিত করবে; (৯) ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত নিয়মিত বা বিশেষ অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনে ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার বিষয়ে পর্যালোচনাসহ একটি আলাদা অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে এবং তা নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে টীকা আকারে প্রকাশ করতে হবে; (১০) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার সংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবের বিপরীতে আরোপিত বা অনারোপিত কোনো সুদ মওকুফ করা যাবে না এবং উক্ত হিসাব পুনঃতফসিলও করা যাবে না; (১১) কোনো খেলাপী ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে চ‚ড়ান্তকৃত হলে গ্রাহকসংশ্লিষ্ট ঋণ হিসাবটি অন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঞধশবড়াবৎ করা যাবে না; (১২) ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা কর্তৃক গৃহীত ঋণ সম্পূর্ণ আদায়/পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ঋণ গ্রহীতা ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হিসেবে বিবেচিত হবে। ৭। নির্দেশনা লঙ্ঘনের জন্য জরিমানা: কোনো ব্যাংক কর্তৃক উপরে বর্ণিত নির্দেশনা লঙ্ঘন করা হলে অথবা কোনো ব্যাংক জ্ঞাতসারে বা ইচ্ছাকৃতভাবে বর্ণিত নির্দেশনা লঙ্ঘন করেছে মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট বিবেচিত হলে ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে উক্ত লঙ্ঘনের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক-কে অন্যূন ৫০ (পঞ্চাশ) লক্ষ টাকা এবং অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা জরিমানা আরোপ করা হবে। যদি উক্ত লঙ্ঘন অব্যাহত থাকে, তাহলে উক্ত লঙ্ঘনের প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য অতিরিক্ত অনূর্ধ্ব ১ (এক) লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপিত হবে। ৮। রিপোর্টিং: (১) ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতা শনাক্ত ও চ‚ড়ান্তকরণের পর এ সংক্রান্ত তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেডিট ইনফরমেশন ব্যুরো (সিআইবি) তে রিপোর্ট করতে হবে। ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতাকে সিআইবিতে ডউ হিসেবে প্রদর্শন করতে হবে; (২) ব্যাংক কর্তৃক ইচ্ছাকৃত খেলাপী ঋণ গ্রহীতার তথ্য ক্সত্রমাসিক ভিত্তিতে বিবরণী আকারে (সংযোজনী-‘খ’ মোতাবেক) প্রতি ক্সত্রমাস অন্তে পরবর্তী মাসের ১০ (দশ) তারিখের মধ্যে ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ (ডিভিশন-১) এর নিকট দাখিল করতে হবে এবং এতদ্সংক্রান্ত যাবতীয় দলিলাদিসহ হালনাগাদ বিবরণী বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের চাহিদা মোতাবেক উপস্থাপন করতে হবে। ৯। ব্যাংক কোম্পানী আইন, ১৯৯১ (২০২৩ পর্যন্ত সংশোধিত) এর ২৭খ ও ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। ১০। ৩০ জুন ২০২৪ ভিত্তিক তথ্য/উপাত্ত অনুযায়ী উপরের নির্দেশনা আগামী ০১ জুলাই ২০২৪ তারিখ হতে বাস্তবায়ন করতে হবে।

Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *