বাংলাদেশে মার্কিন কম্পানিগুলোর বিনিয়োগের বিপুল আগ্রহ থাকলেও বড় কয়েকটি চ্যালেঞ্জও রয়েছে।


বাংলাদেশে মার্কিন কম্পানিগুলোর বিনিয়োগের বিপুল আগ্রহ থাকলেও বড় কয়েকটি চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এগুলো হলো উচ্চহারের শুল্ক কর, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় আমদানি-রপ্তানি পর্যায়ে দীর্ঘসূত্রতা, পরিবহনসহ সব ধরনের লজিস্টিকস ঘাটতি ইত্যাদি। এসব মিলে বিনিয়োগের পরিবেশ দুর্বলতায় এ দেশে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোক্তাদের তেমন আকর্ষণ করে না। বাণিজ্যিক আইনগুলোকে আরো সহজ করা গেলে মার্কিন কম্পানিগুলোর জন্য ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের গন্তব্য হবে বাংলাদেশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ‘ইউএস-বাংলাদেশ বাণিজ্যিক সহযোগিতা বৃদ্ধি’ শীর্ষক আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের (অ্যামচেম) মাসিক মধ্যাহ্নভোজ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর ড. জন ফে। অ্যামচেমের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল।

ড. জন ফে বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারী দেশগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বড় বাজার। মার্কিন কম্পানিগুলো এরই মধ্যে ৪০০ কোটি ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে। আশার কথা হচ্ছে এটা নিয়মিত বাড়ছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য মার্কিন উদ্যোক্তাদের কাছে পাঁচটি আকর্ষণীয় খাত রয়েছে। এগুলো হলো জ্বালানি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) ও আতিথেয়তা। এ ছাড়া বাণিজ্যিক অবকাঠামো, পরিবহন খাতেও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে

যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, সদ্যোবিদায়ি অর্থবছরে এক হাজার ৪০০ কোটি ডলার দাঁড়িয়েছে বিনিয়োগের পরিমাণ। বাংলাদেশ আমেরিকায় রপ্তানি করে এক হাজার ২০০ কোটি ডলারের পণ্য। আর বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের প্রায় ৯৫ শতাংশ রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশের ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অ্যাফিলিয়েশন আছে বলেও জানান জন ফে।

এক প্রশ্নের জবাবে জন ফে বলেন, বাংলাদেশে কিছু পণ্যে অগ্রাধিকার বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র।

তা ছাড়া এখানে অনেক মার্কিন লজিস্টিক কম্পানি (উৎপাদনস্থল থেকে ভোক্তা পর্যন্ত পণ্যের ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও জাহাজীকরণ) কাজ করে। তবে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় পিছিয়ে রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এর কারণে এই দেশ মার্কিন বিনিয়োগকারীদের তেমন আকর্ষণ করে না।

 

অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, বাংলাদেশে লজিস্টিক ব্যয় বেশি। অপ্রতুল বন্দর ব্যবস্থাপনা ও আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা রয়েছে। এ ছাড়া গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সংকট প্রকট। আর তাই ব্যবসা সহজীকরণ সূচকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৯ দেশের মধ্যে ৮৮তম।

তবে তিনি মনে করেন, বিদ্যমান জ্বালানি ব্যবস্থাপনাকে আরো গুরুত্ব দেওয়া গেলে এই সংকট থেকে বের হয়ে আসা সম্ভব।

Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *