বাংলাদেশ এখন মসলিন জামদানি খাদি ও সিল্কের দিকে নজর দিচ্ছে


বাংলাদেশে তৈরি পোশাকশিল্পে টেকসই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যে মসলিন, জামদানি, খাদি, সিল্ক, মনিপুরির মতো দামি পোশাক রফতানিতে নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। তিনি বলেন, তৈরি পোশাকশিল্পে পরিমাণভিত্তিক (ভলিউম) উৎপাদন থেকে সরে এসে মূল্য সংযোজনে কৌশলগত পরিবর্তনের ওপর জোর দিতে হবে। শিল্পের দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যের জন্য এই রূপান্তর খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বুধবার (২৪ মে) উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সে আয়োজিত ‘ক্রিয়েটিং হাই-এন্ড ফ্যাশন হেরিটেজ ম্যাটারিয়ালস ফ্রম বাংলাদেশ’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রশিক্ষণ উদ্যোগটি ইআইএফ এক্সপোর্ট ডাইভারসিফিকেশন অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (টায়ার ২) অধীনে হাই অ্যান্ড ফ্যাশন প্রজেক্টের (আন্তর্জাতিক রফতানি বাজারের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহ্য সামগ্রী যুক্তকরণ) একটি অংশ।

বিজিএমইএর সেন্টার অব ইনোভেশন, এফিশিয়েন্সি অ্যান্ড অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথের (সিআইইওএসএইচ) অধীনে পরিচালিত এই প্রশিক্ষণের লক্ষ্য হলো ঐতিহ্যবাহী বস্ত্র ও উপকরণ ব্যবহার করে উচ্চমানের ফ্যাশনেবল পোশাক তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতাসম্পন্ন ফ্যাশন পেশাজীবী এবং ডিজাইনার তৈরি করা।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএর পরিচালক নীলা হোসনে আরা।

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে এবং এখন পরিমাণ থেকে সরে এসে মূল্য সংযোজনে মনোযোগ প্রদান অপরিহার্য হয়ে উঠেছে।

তিনি আরও বলেন, মূল্য সংযোজন এবং উচ্চমূল্যের ফ্যাশন আইটেমগুলোতে ফোকাস করার মাধ্যমে শিল্পটি তার প্রতিযোগী সক্ষমতা বাড়াতে পারে, নতুন সুযোগগুলো অন্বেষণ করতে পারে এবং এভাবে পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক প্রবণতার প্রেক্ষাপটে শিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে।

বাংলাদেশের সমৃদ্ধময় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ফ্যাশনের সঙ্গে যুক্ত করে পোশাক তৈরির ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, এটি রফতানি আয় বাড়াতে এবং উচ্চমূল্যের পোশাক উৎপাদনের কেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বাড়াতে সাহায্য করবে।

ফারুক হাসান বলেন,  ‘অন্যান্য দেশের মানুষ যখন মসলিন, জামদানি, খাদি, সিল্ক, মনিপুরির মতো আমাদের দেশীয় ঐতিহ্য সামগ্রীযুক্ত পোশাক পরিধান করবে, তখন ফ্যাশনেবল পোশাকগুলো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকেই উপস্থাপন করবে। প্রকারান্তরে এটি বাংলাদেশের ব্র্যান্ড ইমেজ আরও বাড়াবে।’

বিখ্যাত ফ্যাশন ডিজাইনার এবং শিকাগো-ভিত্তিক ফ্যাশন ব্র্যান্ড নেভালের প্রতিষ্ঠাতা আনাদিল জনসন প্রশিক্ষণ সেশন পরিচালনা করছেন। এতে ডিজাইনার, প্যাটার্ন মার্কার, মার্চেন্ডাইজার, দেশীয় টেক্সটাইল সামগ্রীর তাঁতি এবং ফ্যাশন ও টেক্সটাইল ছাত্ররা অংশ নেন।
মোট ১৬০ জন পেশাজীবীকে হাই অ্যান্ড ফ্যাশনেবল কালেকশন ডেভেলপমেন্ট, সাসটেইনেবিলিটি ইস্যু প্রভৃতি বিষয়ে নিবিড় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।

Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *