রেমিট্যান্সে ডলারে ১০৮, রপ্তানিতে ১০৬ টাকা দেবে ব্যাংক


ঈদের মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাসী আয় কমার প্রবণতার মধ্যে প্রতি ডলারে ১ টাকা বাড়াল ব্যাংকগুলো। আগামী মঙ্গলবার থেকে রেমিট্যান্সে ডলারপ্রতি ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি বিল নগদায়নে ১০৬ টাকা দেবে ব্যাংকগুলো। এ ছাড়া রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল কেনার গড় দরের সঙ্গে সর্বোচ্চ ১ টাকা যোগ করে আমদানিকারকের কাছে ডলার বিক্রি করা হবে। 

রোববার ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যাংকের সংগঠন বাফেদার যৌথ সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।

ডলারের দর হুহু করে বাড়তে থাকায় গত সেপ্টেম্বর থেকে নিজেরা দর ঠিক করলেও মাঝে অনেক ব্যাংক তা মানছিল না। বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউস থেকে অনেক ব্যাংক ডলার কিনছিল ১১২ থেকে ১১৩ টাকায়। আবার এই ডলার বিক্রি করছিল ১১৫ থেকে ১১৬ টাকায়। যদিও ব্যাংকগুলো নথিপত্রে নির্ধারিত দরই দেখাচ্ছিল। এ ক্ষেত্রে বাড়তি অংশ অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে পরিশোধ হচ্ছিল। 

গত ১ এপ্রিল ব্যাংকের এমডিদের নিয়ে ব্যাংকার্স সভায় গভর্নর এ বিষয়ে কঠোরভাবে সতর্ক করেন। কোনো ব্যাংক ঘোষণার চেয়ে বেশি দরে ডলার কিনলে এমডিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ব্যক্তিগতভাবে জরিমানার কথা বলেন। এর পর আবার রেমিট্যান্স কমছে।

প্রতিবছর ঈদ ও রমজানকে কেন্দ্র করে ব্যাংকিং চ্যানেলে বাড়ে প্রবাসী আয়। তবে এবার ঈদের মাসেও চাঙ্গা হয়নি রেমিট্যান্স। এপ্রিল মাসের ২১ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে মাত্র ১২১ কোটি ডলারের সমপরিমাণ প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ কোটি ৫ লাখ ডলার। 

কড়াকড়ির আগে গত মার্চে ২০১ কোটি ৭৭ লাখ ডলারের সমপরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছিল। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৫১ লাখ ডলার। গত মার্চের এ রেমিট্যান্স ছিল টানা সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগের বছরের এপ্রিল মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ২০১ কোটি ৮ লাখ ডলার। দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার।

বৈঠকে উপস্থিত একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সমকালকে বলেন, ব্যাংকের সঙ্গে হুন্ডিতে ডলারের দরে পার্থক্যের কারণে ব্যাংকগুলো আশানুরূপ ডলার পাচ্ছে না। এ ছাড়া আইএমএফের শর্তের আলোকে সব পর্যায়ে ডলারের এক দর করার শর্ত রয়েছে। এসব বিবেচনায় এখন আবার দর বাড়ানো হচ্ছে।

চরম ডলার সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো গত বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর সময়ে ১১৪ টাকা পর্যন্ত দরে এ মুদ্রাটি কিনছিল। এক বছর আগেও দর ছিল ৮৬ টাকা। অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির প্রভাবে আমদানিতে ব্যয় অনেক বেড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এরকম বাস্তবতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যস্থতায় গত ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ডলার কেনায় সর্বোচ্চ দর নির্ধারণ করে আসছে ব্যাংকগুলো। শুরুতে রেমিট্যান্সে সর্বোচ্চ ১০৮ টাকা এবং রপ্তানি বিল নগদায়নে ৯৯ টাকা দর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। তবে দুয়ের মধ্যে দরের পার্থক্য কমাতে রেমিট্যান্সে দুই দফায় ১ টাকা কমানো হয়েছিল। এখন আবার বাড়ল। 

রপ্তানি বিল নগদায়নেও দর বাড়িয়ে পর্যায়ক্রমে দুটি ক্ষেত্রেই ডলারের হার একই করা হবে। তখন আমদানিতে ডলারের দরে বড় ধরেনর ব্যবধান থাকবে না।

Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *