একা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে মূল্যস্ফীতি মোকাবেলা সম্ভব না —গভর্নর


মূল্যস্ফীতি, বিনিময়হার ও সুদহারের মতো সমস্যাগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একার পক্ষে মোকাবেলা করা সম্ভব না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। তিনি বলেন, ‘এসব কিছু মোকাবেলা করতে মনিটরি সেক্টর ও ফিসক্যাল সেক্টরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’

গতকাল রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে বিআইডিএস রিসার্চ অ্যালমানাক ২০২৩ শীর্ষক সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ডোনার ড্রাইভেন কথাটার সঙ্গে আমি দ্বিমত পোষণ করছি। আমাদের এখন যে সহযোগিতা তার ৯৫ শতাংশই লোন এবং ৫ শতাংশ গ্রান্ট। এই ৫ শতাংশ গ্রান্টও আমরা চাই না। তারা জোর করে আমাদের দিতে চায়। আমরাও না বলি না। আমরা লোন নেই এবং সুদসহ তাদের পরিশোধ করি। এসইআইপি যে ট্রেনিং দেয় তাতে মোটেও আমাদের এক্সিসটিং ইনস্টিটিউটকে বাইপাস করা হয় না। টিটিসি ও বিটাকের মাধ্যমে এ ট্রেনিং দেয়া হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ম্যাক্রো ইকোনমিকসের অনেকগুলো ইনডিকেটর নিয়ে কথা আসছে। এর মধ্যে রয়েছে ইনফ্লেশন, এক্সচেঞ্জ রেট এবং ইন্টারেস্ট রেট। এখানে বাংলাদেশের ব্যাংকের অবস্থান আমি উল্লেখ করতে চাই। অনেকের কথার সঙ্গে বাস্তবতার পার্থক্য রয়েছে।’

কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংক ফান্ডের মিটিং, জি২০-এর দুইটা মিটিং হয়েছে। এসব মিটিংয়ে একটা বিষয় উঠে এসেছে। এবারের যে ক্রাইসিস ইনফ্লেশন, এক্সচেঞ্জ রেট এবং ইন্টারেস্ট রেট—এগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে একা মোকাবেলা করা সম্ভব না। এখানে মনিটরি সেক্টর ও ফিসক্যাল সেক্টর একসঙ্গে কাজ না করলে মোকাবেলা করা অসম্ভব। গত বছরের জুলাই থেকে আমরা একসঙ্গে কাজটা শুরু করেছি।’

গত বছর অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তব্যে স্পষ্ট মূল্যস্ফীতির বিষয়ে বলা হয়েছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘অর্থমন্ত্রী বলেছেন যে এ মূল্যস্ফীতি মানি সাপ্লাই থেকে আসে না। এটা লোকালি ইনডিউসড ইনফ্লেশন না। এখানে যে কৌশল নেয়া হয়েছিল তা হলো ডিমান্ড কনটেইন করা ও সাপ্লাই সাইডে ইন্টারভেনশন বাড়ানো। ইন্টারভেনশন করতে অনেক বেল্ট টাইটেনিং পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে ফিসক্যাল ও মনিটরি সেক্টরে। আমরা অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের আমদানি ও বিলাসবহুল আমদানিকে নিরুত্সাহিত করেছি। যার মাধ্যমে ডিমান্ডকে আগের লেভেলে রাখা হয়েছে। এছাড়া সাপ্লাই সাইডে এ সময় অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে উত্সাহিত করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বড় ঋণগুলো যাতে নিরুত্সাহিত করা হয়, সে পদক্ষেপ নিয়েছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কোয়ান্টিটেটিভ টাইটেনিং করেছি। ইফেক্টিভ এক্সচেঞ্জ রেট ঠিক করতে আমরা অনেকগুলো পদ্ধতি স্টাডি করেছি। সবকিছু মিলিয়ে মার্কেট বেইজ এক্সচেঞ্জ রেটের মাধ্যমে কীভাবে সমতা রাখা যায়, সেজন্য কাজ করেছি।’

গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, ‘ইন্টারেস্ট রেট যেকোনো কারণেই হোক একটা ক্যাপে নিয়ে আসা হয়েছিল। ব্যাংকগুলো তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বেশি টাকা ডিপোজিট নিচ্ছে। এখন এটা মার্কেট বেইজড হয়ে গেছে। এতে করে আমাদের সেভিংস রেট বাড়ছে। লেন্ডিংস রেটে আমরা রেফারেন্স রেট তৈরি করছি। আমেরিকা যেটা ব্যবহার করে সেকেন্ডারি মার্কেটে যে ট্রেড হচ্ছে সেটা কনসিডার করে। কিন্তু আমাদের দেশে ট্রেজারি বিলে সেকেন্ডারি মার্কেট নেই।’

Author


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *